ঢাকা , শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫ , ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এই সরকার দিয়ে কোনো অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়-ডা. তাহের লাখো মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে যারা ধর্মের নামে রাজনীতির ব্যবসা করে, তাদের হাতে নারীরা নির্যাতিত-সালাহউদ্দিন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না-প্রধান উপদেষ্টা নারীদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়নের চিন্তা করলে ভুল হবে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকালীন ডিসি নিয়োগ পুলিশ দেখে ফেলে যাওয়া প্রাইভেটকারে মিললো এক লাখ পিস ইয়াবা তিন মাসে আয়ে প্রবৃদ্ধি তবুও তিতাসের লোকসান ২৪৯ কোটি টাকা প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখেই তরুণের আত্মহত্যা দুই দশকে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা আটগুণ বৃদ্ধি মুন্সিগঞ্জের ভাষানচর বালুমহল ইজারা ঘিরে অভিযোগ, হয়রানি বন্ধে তদন্তের দাবি কৃষি গুচ্ছ ভর্তির আবেদন শুরু ২৫ নভেম্বর, পরীক্ষা ৩ জানুয়ারি ভয়াবহ দুর্ভোগ হানিফ ফ্লাইওভারে! যৌনাচারের অভিযোগে ঢাবি শিক্ষক গ্রেফতার ইসলামী ব্যাংক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্বাচনের আগে গণভোট চায় ৮ দল আমি পাশে না দাঁড়ালে গ্রামীণ ব্যাংকের অনেক স্থাপনা থাকতো না-কাদের সিদ্দিকী স্কুলে ভর্তিতে কোটা নিয়ে আপত্তি অভিভাবকদের দেশে দ্রুত কমছে খাদ্যের মজুত ট্রাভেল এজেন্সি অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

স্যোশাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ রাখা বড় চ্যালেঞ্জ

  • আপলোড সময় : ১০-১১-২০২৫ ০১:২০:০৭ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-১১-২০২৫ ০১:২০:০৭ অপরাহ্ন
স্যোশাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ রাখা বড় চ্যালেঞ্জ
নির্বাচনী পরিবেশে এবার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে থাকবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত সত?্য-মিথ?্যা মিলিয়ে তথ?্য। ফেসবুক, টুইটারের পাশাপাশি ইউটিউবে প্রচারিত অসমর্থিত সূত্রের নানা ভিডিও। বড় প্রশ্ন আকারে সামনে এসেছে, প্রতিনিয়ত সত্যের মোড়কে মিথ?্যা তথ্য প্রচারকে কীভাবে মোকাবিলা করবেন নাগরিকরা। যারা ফ?্যাক্ট চেক করছেন তারা বলছেন, ডিসইনফরমেশনের পরিমাণ বেশি হওয়ায় পুরোটা ফ?্যাক্ট চেকের আওতায় আনা সম্ভব না। অপতথ্যের বেশিরভাগই মতামত, ঘৃণা প্রচারের বিষয় হওয়ায় সেসবের পদ্ধতিগত ফ?্যাক্ট চেক হয়ও না। এ ধরনের তথ?্য বিশ্বাস করা ও ছড়ানোর বিষয়ে দরকার সচেতনতা। বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের আইসিটি বিভাগ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যার মধ্যে আছে সাইবার মনিটরিং সেল গঠন, ডিজিটাল নিরাপত্তা ও ভুয়া সংবাদ প্রতিরোধ উদ্যোগ এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ। কিছু ইউটিউব চ্যানেল নিজেদের ‘নিউজ চ্যানেল’ হিসেবে উপস্থাপন করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা দলীয় প্রচারণা চালায় বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য ছড়ায়। এসবে অ্যালগরিদমের অপব্যবহার করা হয়। যেসব ভিডিও দ্রুত ভিউ পায়, ইউটিউবের অ্যালগরিদম সেগুলো আরও বেশি মানুষকে দেখায়। ফলে ভুয়া তথ্য দ্রুত ভাইরাল হয়। সেসবে সতর্ক থাকা জরুরি। মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক সুদীপ্ত সালাম দুটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে এআই এবং ইউটিউবকেন্দ্রিক অপসাংবাদিকতাকে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, এখনই আমরা দেখছি এআই দিয়ে তৈরি নানা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। অনেকে সেসব ভিডিওর তথ্য সত্য হিসেবে ধরেও নিচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে সেসব ভিডিও যাচাই করাও সম্ভব হচ্ছে না। এই সিনারিও দিনদিন বাড়ছে, সামনেও বাড়বে। অন্যদিকে ভিউ ব্যবসার নামে গজিয়ে ওঠা ইউটিউব-ফেসবুককেন্দ্রিক অপসাংবাদিকতার প্লাটফর্মগুলো অভিশাপের মতো কাজ করছে, করবে। এসব প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার কোনো তোয়াক্কা করা হয় না। যে কারও হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ক্যামেরা, বুম ও মোবাইল ফোন। তারা জানেও না সাংবাদিকতা কী। শুধু জানে, তাকে এমন কিছু ধারণ করতে হবে, যা মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ হবে। সুদীপ্ত সালাম আরও বলেন, টেক্সটের চেয়ে ভিডিও কয়েক গুণ বেশি গতিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রভাব ফেলে। সাংবাদিক হলে ভিডিওর মাধ্যমে দ্রুত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ছড়িয়ে পড়বে, অসাংবাদিক হলে দ্রুত অসত্য, উদ্দেশ্যমূলক ও বানোয়াট কন্টেন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে। বর্তমান বাংলাদেশে প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ?্যমে নানা রকম তথ?্য ছড়িয়ে পড়ছে। মূল ধারার মিডিয়ার কাছাকাছি নামে ফেক পেজ, ইউটিউবে ফেক চ্যানেল বানিয়ে স?্যাটায়ার ও অপতথ?্যরে পোস্টের ছড়াছড়ি শঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এই যেকোনও একটা তথ?্য দেখার সঙ্গে সঙ্গে নিজে থেকে সেটা যাচাই না করে শেয়ার করে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সে বিষয়ে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখনকার সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্য খুব সহজে ছড়িয়ে পড়ে, আর সেটা মানুষকে বিভ্রান্ত করে, ভয় তৈরি করে, কখনও ব্যক্তিগত সম্মান বা নিরাপত্তারও ক্ষতি করে। তাই তথ্য দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার না করে একটু থেমে যাচাই করা জরুরি। উৎস কোথা থেকে এসেছে, তারিখ পুরোনো কী নতুন, একই তথ্য একাধিক বিশ্বস্ত মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে কি না-এই তিনটা জিনিস চেক করলেই অনেক ভুল এড়ানো যায়। আমাদের সবার দায়িত্ব হলো-আবেগে নয়, যাচাই করে কথা বলা। কারণ আমরা যেন তথ্যের বাহক হই, আতঙ্কের নয়। ভয়েস ওভার দিয়ে, ভিডিও বানিয়ে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়-কোনটা মেইনস্ট্রিম মিডিয়া, আর কোনটা না, সেটাও আজকাল বের করা কঠিন হয়ে যায় উল্লেখ করে শিশু অধিকারকর্মী ও সাইবার নিরাপত্তা সামাজিক বিশ্লেষক আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, এই সময়টাতে যখন এআই এসে গেছে, তখন অনলাইন ব?্যবহারকারীরা তিন ভাগে ভাগ হয়েছে। একদল বুঝতে পারে না কোনটা ফেক, একদল যা দেখে তাই বিশ্বাস করে, আরেকদল সত?্য মিথ?্যা নিয়ে দ্বিধান্বিত থাকে। যেহেতু এখন ভিডিও ও ছবিকে অল্টার করা যায়, ফলে শঙ্কা বেশি। সতর্ক থাকা ছাড়া উপায় নেই। সেক্ষেত্রে, ‘থিঙ্ক’ পদ্ধতি ব?্যবহারের কথা বলা হয়। কিছু শেয়ার করার আগে দেখুন সেটা ট্রু (সত?্য), হেল্পফুল (কারোর কাজে লাগবে কিনা), ইনফরমেটিভ (তথ?্যবহুল কিনা), নেগেটিভিটি (সত?্য হলেও শেয়ার করার জন?্য সময়োপযোগী কিনা), কাইন্ডনেস (উপস্থাপনের ধরনে) আছে কিনা। মূল কথা বলো, যেটা বুঝি না সেটা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ও বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগ বিষয়ে জানতে চাইলে আইসিটি বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের উদ্যোগ বিষয়ে বলেন, আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে এর আগে বিভিন্ন স্তরের সাংবাদিক এবং পুরো দেশে ছড়িয়ে থাকা যে তথ্য অফিসাররা আছেন, তাদের জন্য ডিজিটাল ভেরিফিকেশনের কাজ করা হয়েছে। যাতে তারা মিসইনফরমেশন ডিসইনফরমেশন আইডেন্টিফাই এবং এই ধরনের এক্সটেন্ডেড কাজগুলো করতে পারেন। সেগুলোর জন্য তাদের বেশ আগে থেকেই আইসিটি মিনিস্ট্রি হতে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। অনেকজনকে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে, এবং একইসঙ্গে নির্বাচনকে সামনে রেখে কীভাবে এই মিসইনফরমেশন ডিপ ফেক, এগুলো আইডেন্টিফাই করতে জনগণকে কীভাবে হেল্প করা যায় এবং সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেটা নিয়ে আইসিটি মন্ত্রণালয় সরাসরি এবং খুব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। ফ্যাক্ট চেক সংস্থা তথ্য যাচাই করে নিরপেক্ষ রায় দেয় কোনটি সত্য, কোনটি বিকৃত, কোনটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এতে জনসাধারণের আস্থা তৈরি হয় এবং গুজবের প্রভাব কমে। সরকারের ছত্রছায়ায় বা স্বাধীনভাবে এখন বেশকিছু প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ফ?্যাক্ট চেকিংয়ের কাজ করছে। কিন্তু যে পরিমাণ অপতথ?্য ছড়াচ্ছে সে পরিমাণ তথ?্য যাচাইয়ের সক্ষমতা কি তৈরি হয়েছে? ডিজিটালি রাইটের ব?্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী মনে করেন অনলাইনে যে মিসইনফরমোশন বা ডিজইনফরমেশন আছে, এখন যারা ফ?্যাক্ট চেক করছেন তারা তার সব যাচাই ক্ষমতা রাখেন না। তার দুটি কারণ আছে। প্রথমত, লোকবল কম, ডিসইনফরমেশন বেশি। দ্বিতীয়ত, পদ্ধতিগতভাবে গণমাধ?্যম ফ?্যাক্ট চেক করতে পারে না। কেননা, যেটা যাচাই করতে চাইবেন সেখানে যাচাইযোগ?্য মিথ?্যা তথ?্য থাকতে হবে। অনলাইনে যা কিছু ছড়ায়, সেখানে গুজব, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, ঘৃণা থাকে, তথ?্য থাকে না। সেখানে মতামত থাকে, মতো যাচাই করা যায় না। তিনি বলেন, মিডিয়ার কাজ আগে ছিল তথ?্য দেওয়া, এখন তাকে কোন তথ?্য মিথ?্যা সেটাও বলতে হয়। তাকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং এখানে বিনিয়োগ করতে হবে। তবে কেবল যাচাই বা অনুসন্ধান করে এই ডিসইনফরমেশন ঠেকানো যাবে না, সোশ?্যাল মিডিয়া প্ল?্যাটফর্মগুলোরও দায়িত্ব আছে। তাদের এগুলো শনাক্ত করতে হবে এবং অধিকার লঙ্ঘন না করে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দিনশেষে জরুরি হলো-মানুষের সচেতন হওয়া। কোনটা কতটুকু নিতে হবে সেটার বোধ তৈরি হওয়াটাই মিসইনফরমোশন ঠেকানোর পদ্ধতি। এটা গড়ে তুলতে হলে আমাদের শিক্ষাব?্যবস্থায় ক্রিটিক?্যাল থিংকিং যুক্ত করতে হবে। প্রেস ক্লাবের সামনে রণক্ষেত্র শিক্ষকদের ওপর জলকামান সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ পুলিশের অ্যাকশনের মুখে সম্মিলিত মোনাজাতে ইবতেদায়ি শিক্ষকরা স্টাফ রিপোর্টার শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এ সময় জলকামান এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। গতকাল রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে শনিবার শাহবাগে তিন দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষকদের ওপর পুলিশ নির্বিচারে লাঠিপেটা, টিয়ার গ্যাস শেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করে। এতে কমপক্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন। এরপর তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমে পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হওয়ার পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। পাশাপাশি তারা বিদ্যালয়গুলোয় পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন। তিন দফা বাস্তবায়ন না করে উল্টো শাহবাগে শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ। রোববার সংগঠনের পক্ষে শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়। এদিন দুপুর ১২টার দিকে দেখা যায়, অনেক শিক্ষক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। শিক্ষকেরা এলাকাভিত্তিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে, দাঁড়িয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। নন-এমপিও শিক্ষকরা জানান, আমরা দীর্ঘদিন থেকে বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছি। বর্তমানে আমরা বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। শিক্ষকদের এক দফা হলো- সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করতে হবে। নন-এমপিও শিক্ষকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয় অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাদের ওপর জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরপরও শিক্ষকরা না সরলে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। নন-এমপিও শিক্ষকদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপরও চড়াও হন পুলিশ সদস্যরা। এসময় অবস্থান ধরে রাখতে কৌশলে সম্মিলিত মোনাজাতে বসেন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা। মোনাজাতরত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের চারদিক দিয়ে পুলিশ কিছুক্ষণ ঘিরে রাখলেও তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরপরই মোনাজাত শেষ করে ফের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা। রোববার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ দৃশ্য দেখা যায়। এ নিয়ে উপস্থিত পুলিশ সদস্য ও উৎসুক মানুষের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। তবে ইবতেদায়ি শিক্ষকরা জানান, তারা মাদরাসার শিক্ষক, ইসলাম ধর্মের অনুসারী। সেই হিসেবে তারা যে কোনো বিপদ-আপদ আসলে আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে মোনাজাত করেন, দোয়া করেন। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থেকে আসা ইবতেদায়ি শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করছি। পুলিশের সঙ্গে কোনো ঝামেলায় জড়ায়নি। তাহলে তারা কেন অযথা আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করবে? আমাদের নেতারা সম্মিলিত মোনাজাতে মাধ্যমে সম্ভাব্য ঝামেলা থেকে শিক্ষকদের বাঁচিয়েছেন। হঠাৎ মোনাজাত ধরার বিষয়ে তিনি বলেন, ইসলাম আমাদের শিখিয়েছ যে কোনো বালা-মুসিবত এলে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করতে হবে। আল্লাহই সব বিপদ থেকে রক্ষা করবেন। এখানে সেটাই ঘটেছে। এটা হাসি-ঠাট্টার কিছু নেই। আমরা প্রায়ই এমন মোনাজাত করি। সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয় অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, সকাল থেকে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছিলাম। আমাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার দুপুর আড়াইটার সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘেরাও কর্মসূচি পূর্ণভাবে পালন করছিলাম। কিন্তু বিনা উসকানিতে পুলিশ শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়ে লাঠিপেটা শুরু করে। এতে আমি নিজেও আহত হই। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা আহত হয়েছেন। এমন হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। শিক্ষকদের এমপিও প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ বিষয়ে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (পেট্রোল) বুলবুল আহমেদ বলেন, নন-এমপিও শিক্ষকরা দুপুরের দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে তাদের নেতারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, সাধারণ শিক্ষকরা তা অমান্য করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে চায়। সে সময় পুলিশ তাদেরকে জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় এক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। তবে লাঠিচার্জের কথা অস্বীকার করেন তিনি। এদিকে, ?রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সামনে আন্দোলনরত বিসিএস পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ?এদিন দুপুর ২টায় আগারগাঁও পিএসসি ভবনের সামনের সড়কে এই ঘটনা ঘটে। ?আন্দোলনরত বিসিএস পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবত ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীরা নানা দাবি নিয়ে পিএসসি ভবনের সামনে আন্দোলন করছিলেন। এ সময় পুলিশ এসে তাদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পরীক্ষার্থীরা সরতে না চাওয়ায় তাদের ওপর জলকামান নিক্ষেপসহ লাঠিপেটা করে তাদের আহত করে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমাবেশ ও পদযাত্রায় পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জানায় আসক। আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধান ৩৭ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা আছে, শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ মৌলিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার স্পষ্ট লঙ্ঘন। এছাড়া, শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে সরকারের কোনো গঠনমূলক পদক্ষেপ না নেওয়া দুঃখজনক। শিক্ষক সমাজ জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গঠনের মূল ভিত্তি। তাদের ওপর হামলা শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। সংগঠনটির দাবি, আহত শিক্ষকদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত এবং অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনায় দায়ীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এছাড়া, শিক্ষকদের দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করে সংলাপের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছে আসক।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স